সূচনা
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (Rajshahi University) বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রাচীন এবং বৃহত্তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি।
- এটি রাজশাহী শহরে ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তখন থেকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
- রাবির প্রতিষ্ঠাতা মাদার বখশের ৫৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি): অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইন পরিষদ সদস্য (এমএলএ) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মাদার বখশ্- এর ৫৫তম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি)।
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য– ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরী।
- রাজশাহী জেলায় অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের অন্যতম প্রধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।
- “প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ” খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার গুণগত মান এবং গবেষণার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশেষ সম্মান অর্জন করেছে।
ক্যাম্পাস
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রায় ৭৫২ একর জমির উপর অবস্থিত, যা সবুজে ঘেরা এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা
- সম্বলিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশন এবং ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের নিকটবর্তী হওয়ায় ক্যাম্পাসে যাতায়াত
- অত্যন্ত সহজ। বর্তমানে এখানে প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন, যারা বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং গবেষণা পর্যায়ের শিক্ষা গ্রহণ করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ এবং বিভাগ
- বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি অনুষদ এবং প্রায় ৫৯টি বিভাগ রয়েছে, যেখানে বিজ্ঞান, কলা, ব্যবসা শিক্ষা, সামাজিক বিজ্ঞান, প্রকৌশল, এবং আইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা রয়েছে।
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র শিক্ষাদানের জন্যই নয়, বরং গবেষণার ক্ষেত্রেও খ্যাতিমান। বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞান এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য সর্বদা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
- এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলার চর্চার সুযোগও রয়েছে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
- প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষা, গবেষণা এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে।
- শিক্ষা ও গবেষণায় উচ্চমান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়টি নিয়মিত নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম।
- আরও তথ্যের জন্য এবং বিভিন্ন বিভাগের বিশদ বিবরণের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট পরিদর্শন করতে পারেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার প্রাণের বিনিময়ে স্বাধিকার সংগ্রামের ইতিহাসে যুক্ত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম।
- প্রক্টর হিসেবে শান্তিরক্ষার দায়িত্ব পালনরত ড. জোহা ছাত্রদের মিছিলকে সংযত রাখার চেষ্টা করেছিলেন, চেষ্টা করছিলেন তার প্রাণপ্রিয় ছাত্ররা যাতে পশ্চিমা শাসক চক্রের লেলিয়ে দেয়া সশস্ত্র বাহিনীর আক্রমণের শিকার না হয়।
- কিন্তু ওদের বর্বর আক্রোশ মুহূর্তে বিদীর্ণ করে তার বুক। ড. জোহার মৃত্যুতে সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল।
- প্রতিবাদে টলে উঠেছিল আইয়ুব খানের গদি, পতন হয়েছিল সেই স্বৈরশাসকের।
- তারই ফলে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির পথের একটি ধাপ পেরিয়ে এসেছিল মুক্তিকামী বাঙালী।
- বাঙালীর মনে অধ্যাপক জোহা বেঁচে আছেন শহীদ জোহা হিসেবে।
- মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক পর্বেই বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে প্রাণ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শহীদ হবিবুর রহমান, শহীদ [মীর আবদুল কাইয়ুম], শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার।
- অকথ্য নির্যাতন ভোগ করেছিলেন গণিত বিভাগের শিক্ষক মজিবর রহমান।
- এছাড়া আরও ত্রিশ জন ছাত্র, কর্মচারী-কর্মকর্তাও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।